বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা ও তার প্রতিকারের ঘরোয়া পদ্ধতি


বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা ও তার প্রতিকারের ঘরোয়া পদ্ধতিতে আসার আগে সব ত্বকেরই কিছু বিশেষ যত্নের কথা আগে জানাই---

* যে কোন ঋতুতে ত্বকের যত্ন নেওয়ার প্রথম ধাপ পরিচ্ছন্নতা।
* যে ধরনের ত্বক হোক না কেন সাবান ব্যবহার করা উচিত নয়।
* ত্বক ভালো রাখার জন্য প্রচুর জল খাওয়া দরকার। ত্বক আর্দ্র ও সজীব রাখতে জল সাহায্য করে।
* স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। অবশ্যই তৈলাক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। এতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাবে। রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পেলেই ত্বক সুন্দর হবে।
* ময়শ্চারাইজার প্রধান।
* শীতকালে অনেকেই তেল ব্যবহার করেন। নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মাখুন। কিছু ভুল ধারণা আছে অনেকের নারকেল তেল মাখলে ঠান্ডা লাগে।
তাহলে বলি নারকেল তেল মাখলে ঠান্ডা লাগে না। যেমন সরষের তেল মাখলে শরীর গরম হয় না। কোন তেলই শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বদল ঘটাতে পারে না।

আজ ঘরোয়া পদ্ধতিতে শীতকালে বিভিন্ন ত্বকের কিছু সমাধান জানাচ্ছি --
ত্বকের গুরুত্বপূর্ণ ৩টি ধাপ হল ক্লেনজিং, টোনিং, ময়শ্চারাইজিং। মুখ ভালো করে পরিষ্কার করা, টোনার ও ময়েশ্চারাইজার লাগানো। এ তিনটি সারা বছর করা খুবই দরকার। শীতকালে বাইরের আবহাওয়ায় ধুলো, ময়লা, জীবাণু অনেক বেশী থাকে। ত্বক অন্য ঋতুর থেকে বেশি ময়লা হয়।।

শুষ্ক ত্বকের জন্য-
এই ত্বকের সমস্যা শীতে সবচেয়ে বেশী। শীতে এই ত্বক আরো বেশী শুষ্ক হয়ে যায় তাই এর যত্ন বিশেষ ভাবে দরকার।।
*সারাদিনে দুই বার বা তিন বার গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন।
*সারাদিনে বা খুব ভালো হয় রাতে শুতে যাওয়ার আগে দুধের সঙ্গেঁ মধু মিশিয়ে হালকা ম্যাসাজ করে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। শুষ্কতা কমবে অনেকটাই।
*মধু, দই, ডিম, গাজরের রস একসঙ্গেঁ মিশিয়ে মুখে লাগান, ২৫ মিনিট পর আলতো করে ঘসে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩দিন করতে পারলে শুষ্কতা কমে যাবে।
*আমন্ড বাটা ও মধু দিয়ে প্যাক করে মুখে লাগান ১৫ মিনিট পর ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ৩ দিন করলে অনেক উপকার পাবেন।।



ঘরোয়া ময়শ্চারাইজার কিভাবে তৈরী করবেন;-
শুষ্ক ত্বকে অলিভ অয়েল, লেবুর রস ৪-৫ ফোঁটা, ডিম মিশিয়ে ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন বা তুলো ভিজিয়ে মুছে নিন।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য আপেল কুরানো বেশ কিছুটা, মধু ১০ ফোঁটা মিশিয়ে ১০-১৫ মিনিট লাগান হালকা ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন বা তুলো দিয়ে মুছে ফেলুন।।
তৈলাক্ত ত্বকের প্যাক তৈরী;-
গোলাপের পাপড়ি বাটা, টক দই ও মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরী করে মুখে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট, উষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।।

সাধারণ ত্বকের প্যাক তৈরী;-
শশার রস, টক দই, কমলালেবু, মধু, মুলতানি মাটি (এটি অনেকের ত্বকে সহ্য হয় না তাই খুব ভাল হয় যদি সাজি মাটি ব্যবহার করুন)। প্যাক তৈরী করে ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে ধুয়ে নিন।

সেনসিটিভ ত্বকের প্যাক তৈরী;-
এই ত্বকের জন্য শীত ঋতু খুব সমস্যার। লাউ বাটা, গাঁদা ফুলের পাপড়ি বাটা, মুলতানি মাটি (আগেই জানান আছে সাজি মাটি হলে খুবই ভাল) প্যাক তৈরী করে সপ্তাহে ২-৩ দিন লাগান।।কে না জানে বাইরে হাজার প্রসাধনের ব্যবহারেও রূপের দরজা খোলে না, যদি না ভিতর থেকে সুন্দর হওয়া যায়। অনেকে আছেন ফর্সা, কেউ শ্যামবর্ণ, কেউ কালো। সকলেই চান সুন্দর হতে। তার জন্য বারবার বিউটি পার্লারে যাওয়া তাতে তার ব্যয় সাধ্যের মধ্যে হোক বা নাই হোক। টিভি, খবরে র কাগজে নানা বিজ্ঞাপন দেখে এটা সেটা কিনে মাখা, বুঝে না বুঝে এই সব কাজ আমরা সবসময় করি। এতে ক্ষতির পরিমাণ কত তা বুঝতে চাই না।



একবারের জন্য যদি আমরা একটু ভাবি হাজার বছর ধরে আমাদের দেশের সকলেই তো রূপচর্চা করতো তখন তো এই সব প্রসাধন ছিল না তাহলে তারা কিভাবে নিজেদের যত্ন করতেন? কি ব্যবহার করতেন তারা?
এই উত্তর একটাই তাহল ‘ভেষজ'। যা অমর তখনও ছিল আজও আছে। আমরা তা জেনেও তার ব্যবকার করি না। ভেষজ দিয়ে সম্পূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধাতিতে আমরা হয়ে উঠতে পারি সুন্দরী।

একদিনের অবৈজ্ঞানিক রূপচর্চা সারাজীবনের খুঁতের কারণ হয়ে উঠতে পারে, তাই আগে নিজে নিজেরা ত্বক চিনুন, বুঝে নিন। আপনার ত্বক সেনসিটিভ, শুষ্ক, তৈলাক্ত না মিশ্র চিনলে, জানতে পারলে তবেই না সঠিক পথে যত্ন নেওয়া যবে?

মিশ্র ত্বকের প্যাক তৈরী;-
এই ত্বকে অবশ্যই দুটি প্যাক তৈরী করে লাগাতে হবে। যে জায়গা তেলতেলে সেখানে- বাঁধাকপির পেষ্ট, নিম পাতার রস, কমলালেবুর রস ও মুলতানি মাটি (অবশ্যই ভাল সাজি মাটি) মিশিয়ে লাগান।।

যদি ত্বক নরম করে রাখতে চান তাহলে কি করবেন;-
ধনে পাতা বাটা, গাজরের রস, বিউলির ডাল, মধু, সামান্য চন্দন গুঁড়ো মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট লাগান। এর পর একটা বাটিতে অর্ধেক জল ও অর্ধেক দুধ মিশিয়ে ধুয়ে নিন বা মুঝে নিন তুলো দিয়ে।।

0 comments:

Thanks for comment