১ম ডিগ্রী পোড়াঃ
এক্ষেত্রে চামড়ার শুধু উপরিভাগের স্তরটি (এপিডার্মিস) ক্ষতিগ্রস্ত হয় যাতে চামড়া লাল বা গোলাপি হয়ে যায়, ব্যথা হয়, চামড়া সাধারণত শুষ্ক থাকে, কখনও কখনও ফোস্কাও পড়ে।
১ম ডিগ্রী পোড়ার চিকিৎসাঃ
১. পোড়ার উৎস অর্থাৎ, আগুন, গরম পানি বা অন্য কোন গরম তরল বা বাষ্প, কেমিক্যাল ইত্যাদি থেকে সরে যান
২. গরম বা পোড়া কাপড় শরীর থেকে খুলে ফেলুন, তবে খেয়াল রাখবেন পোড়া জায়গার সাথে লেগে থাকা কাপড় টানবেন না, বরং লেগে থাকা কাপড়ের চারপাশ কেটে ফেলুন বা ছিঁড়ে ফেলুন
৩. পোড়া জায়গার আশেপাশে চেইন, চুড়ি, বেল্ট ইত্যাদি থাকলে খুলে ফেলুন
৪. পোড়া জায়গা ঠান্ডা (cool but not cold)পানিতে ডুবিয়ে রাখুন অথবা পোড়া স্থানে ঠান্ডা পানি ঢালুন ৫ মিনিট বা ততোধিক সময় ধরে, যতক্ষণ পর্যন্ত ব্যথা না কমে।
৫. ব্যথা বেশী হলে Acetaminophen, Ibuprofen বা Naproxen খেতে পারেন
৬. অ্যান্টিবায়োটিক অয়েন্টমেন্ট (যেমন- Neobacrin, Nebanol plus, Bactroban বা Bactrocin) ব্যবহার করতে পারেন
৭. জীবানুমুক্ত, শুষ্ক, পরিষ্কার, আঠালো নয় এমন ব্যান্ডেজ বা কাপড় দিয়ে আলতোভাবে পোড়া জায়গা ঢেকে দিন এবং দিনে ১-৩ বার তা পরিবর্তন করুন
৮. অন্যকোন মলম বা ক্রিম লাগাবেন না
৯. ফোস্কা হলে তা ফুটো করবেন না
১০. পোড়া স্থানে বরফ, তুলা, ডিম, পেস্ট ইত্যাদি লাগাবেন না
১১. পোড়া জায়গায় যেন আঘাত বা ঘষা না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখবেন
ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন-
- ব্যথা বা লাল ভাব বাড়লে,
- জ্বর আসলে,
- ফোস্কায় পুঁজ জমলে,
- পোড়া জায়গা ২-৩ ইঞ্চির বেশী হলে,
- মুখ, বড় কোন জয়েন্ট যেমন- হাঁটু, কাঁধ ইত্যাদি, হাত বা পায়ের তালু, কুঁচকি, নিতম্ব বা গোপন অঙ্গ পোড়া গেলে।
২য় ডিগ্রী পোড়াঃ
এক্ষেত্রে চামড়ার উপরিভাগের স্তর (এপিডার্মিস) সম্পূর্ণভাবে এবং পরবর্তী স্তর (ডার্মিস) আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যাতে চামড়া লাল, গোলাপি, হালকা গোলাপি বা সাদা হয়ে যায়, খুব ব্যথা হয়, চামড়া সাধারণত ভেজা থাকে, ফোস্কা পড়ে যা থেকে পানি বের হয়।
২য় ডিগ্রী পোড়ার চিকিৎসাঃ
১. পোড়ার উৎস অর্থাৎ, আগুন, গরম পানি বা অন্য কোন গরম তরল বা বাষ্প, কেমিক্যাল ইত্যাদি থেকে সরে যান২. গরম বা পোড়া কাপড় শরীর থেকে খুলে ফেলুন, তবে খেয়াল রাখবেন পোড়া জায়গার সাথে লেগে থাকা কাপড় টানবেন না, বরং লেগে থাকা কাপড়ের চারপাশ কেটে ফেলুন বা ছিঁড়ে ফেলুন
৩. পোড়া জায়গার আশেপাশে চেইন, চুড়ি, বেল্ট ইত্যাদি থাকলে খুলে ফেলুন
৪. পোড়া জায়গা ঠান্ডা (cool but not cold) পানিতে ডুবিয়ে রাখুন অথবা পোড়া স্থানে ঠান্ডা পানি ঢালুন ১০-১৫ মিনিট
৫. ব্যথা বেশী হলে Acetaminophen, Ibuprofen বা Naproxen খেতে পারেন
৬. ফোস্কায় অ্যান্টিবায়োটিক অয়েন্টমেন্ট (Neobacrin, Nebanol plus, Bactroban বা Bactrocin ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়) ব্যবহার করুন দিনে ২-৪ বার, Silver sulphadiazine 1% cream (বাজারে Silcream, Burnsil, Silburn ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়)ও ব্যবহার করতে পারেন
৭. জীবানুমুক্ত, শুষ্ক, পরিষ্কার, আঠালো নয় এমন ব্যান্ডেজ বা কাপড় দিয়ে পোড়া জায়গা ঢেকে দিন এবং দিনে ১-৩ বার তা পরিবর্তন করুন
৮. ফোস্কা ফুটো করবেন না
৯. পোড়া স্থানে বরফ, তুলা, ডিম, পেস্ট ইত্যাদি লাগাবেন না
১০. পোড়া জায়গায় যেন আঘাত বা ঘষা না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখবেন
ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন-
- ব্যথা বা লাল ভাব বাড়লে,
- জ্বর আসলে,
- ফোস্কায় পুঁজ জমলে,
- পোড়া জায়গা ২-৩ ইঞ্চির বেশী হলে,
- মুখ, বড় কোন জয়েন্ট যেমন- হাঁটু, কাঁধ ইত্যাদি, হাত বা পায়ের তালু, কুঁচকি, নিতম্ব বা গোপন অঙ্গে পোড়া গেলে
- ১২. খুব বেশী জায়গা পুড়ে গেলে রুগী Shock এ চলে যেতে পারে, তাই দ্রুত নিচের ব্যবস্থা নিনঃ
- রুগীকে চিৎ করে শুইয়ে দিন
- পা দুটি ১ ফুট উঁচুতে রাখুন
- সম্ভব হলে পোড়া জায়গা হার্টের চেয়ে উপরের লেভেলে রাখুন
- রোগীকে কোন জামা বা কম্বল দিয়ে ঢেকে দিন
- দ্রুত ডাক্তারের কাছে বা হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন ।
৩য় ডিগ্রী পোড়াঃ
এক্ষেত্রে চামড়ার দুটি স্তরই (এপিডার্মিস ও ডার্মিস) সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চামড়ার নিচে থাকা মাংসপেশী, হাড়, রক্তনালি, স্নায়ু ইত্যাদিও আক্রান্ত হতে পারে যাতে চামড়া কাল বা সাদা এবং শক্ত হয়ে যায়, সাধারণত ব্যথা হয় না, চামড়া শুষ্ক থাকে, ফোস্কা পড়ে না।৩য় ডিগ্রী পোড়ার চিকিৎসাঃ
দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন, ইতিমধ্যে নিচের ব্যবস্থাগুলো নিনঃ১. পোড়ার উৎস অর্থাৎ, আগুন, গরম পানি বা অন্য কোন গরম তরল বা বাষ্প, কেমিক্যাল ইত্যাদি থেকে সরে যান
২. গরম বা পোড়া কাপড় শরীর থেকে খুলে ফেলুন, তবে খেয়াল রাখবেন পোড়া জায়গার সাথে লেগে থাকা কাপড় টানবেন না, বরং লেগে থাকা কাপড়ের চারপাশ কেটে ফেলুন বা ছিঁড়ে ফেলুন
৩. পোড়া জায়গার আশেপাশে চেইন, চুড়ি, বেল্ট ইত্যাদি থাকলে সম্ভব হলে খুলে ফেলুন
৪. পোড়া জায়গায় পানি ঢালবেন না বা জায়গাটি পানিতে ডোবাবেন না
৫. খুব বেশী জায়গা পুড়ে গেলে রুগী Shock এ চলে যেতে পারে, তাই দ্রুত নিচের ব্যবস্থা নিনঃ
রুগীকে চিৎ করে শুইয়ে দিন
পা দুটি ১ ফুট উঁচুতে রাখুন
সম্ভব হলে পোড়া জায়গা হার্টের চেয়ে উপরের লেভেলে রাখুন
রোগীকে কোন জামা বা কম্বল দিয়ে ঢেকে দিন
শ্বাসনালীর আশেপাশে পুড়ে গেলে শোয়া অবস্থায় মাথার নিচে বালিশ দিবেন না, এতে শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে
৬. জীবানুমুক্ত, শুষ্ক, পরিষ্কার, আঠালো নয় এমন ব্যান্ডেজ বা কাপড় দিয়ে পোড়া জায়গা ঢেকে দিন তবে খেয়াল রাখবেন হাত বা পায়ের আঙুল পুড়ে গেলে তা আলাদাভাবে ব্যান্ডেজ করবেন
৭. রোগীর জ্ঞান থাকলে এবং মুখে খাওয়ার মতো অবস্থা থাকলে পানি, লবন-পানির শরবত, স্যালাইন বা ডাবের পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করতে দিন
৮. টিটেনাস টীকা রোগীর অবস্থা অনুসারে নিতে হবে।
সুত্রঃ ইন্টারনেট
ডাঃ মোঃ রেদওয়ানুল হক মাসুম
0 comments:
Thanks for comment