মা এর জন্য ভালোবাসা

‘মা’যেন পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ডাক, আমাদের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ। সব বয়সের মানুষের কথাই ভেবে দেখুন তো। বিপদে পড়লে সবার আগে কিন্তু মা এর কথাই মনে হয়। একটু ব্যথা পেলেই আমরা বলে উঠি ‘’মা গো!!” ছোট বেলায় কোথাও বের হলে মা এর আঁচল ধরে ধরেই তো হাঁটতাম। রাতে ভয় পেলে মা এর গা এর সাথে লেপটে ঘুমাতাম। কোন বিপদে পড়লে সবার আগে সেটার কথা মা কেই তো জানাই, মা এর কাছে ছুটে যাই।  

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে মা দিবস পালন করা হলেও বাংলাদেশে সাধারণত মে মাসের ২য় রবি বার মা দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশে মা দিবসের প্রচলন খুব বেশি দিনের নয় এবং শহরেই এর প্রচলন বেশি। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশ গুলোতে অনেক আগে থেকেই মা দিবস এর প্রচলন শুরু হয়েছে। এই মা দিবস নিয়ে আমাদের দেশে রয়েছে বিভিন্ন মতামত।
কারও কাছে মা দিবস পালন করাটা এক ধরনের আদিখ্যেতা আবার কেউ কেউ এই দিনে মা এর জন্য বিশেষ কিছু করার চেষ্টা করেন, অনেকে আবার এই দিনটির ব্যাপারে কিছু জানেন না।

মা দিবসে আমরা কী করতে পারি মা এর জন্য?

মা দিবস মানে শুধু দোকান থেকে একটি মাদারস ডে কার্ড কিনে মার হাতে ধরিয়ে দেয়া না বা মাকে একটা এস এম এস করে দেয়া না। এই দিনে মা এর সম্মানে এমন কিছু আপনি করতে পারেন যেন আপনার মা উপলব্ধি করেন যে তিনি আপনার জন্য কত টা গুরুত্বপূর্ণ। মা কে এই দিন শুভেচ্ছা জানাতে পারেন নিজের হাতে তৈরি কোনও কার্ড বা চিঠি দিয়ে। দোকানের কার্ডের চাইতে আপনার নিজের হাতে তৈরি কার্ড বা চিঠির মূল্য আপনার মায়ের কাছে অনেক বেশি।

মা এর কোনও প্রিয় জায়গায় মার সাথে সময় কাটানোর জন্য যেতে পারেন বা এমন কোন জায়গা যেখানে আপনার মা এর সাথে আপনার কোন প্রিয় স্মৃতি রয়েছে, অথবা মা কেই জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন যে তিনি আসলে কোথায় যেতে চান বা কীভাবে আপনার সাথে সময় কাটাতে চান।

মা তো আমাদের সারা বছর মজার মজার কত কিছু রান্না করে খাওয়ান। মা দিবসে আপনি না হয় মার জন্য বিশেষ কোন খাবার তৈরি করুন। নিজ হাতে একটি ছোট্ট কেক তৈরি করতে পারেন শুধু মা এর জন্য। আর যদি রান্নায় পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে ক্লাস শেষে বা অফিস থেকে ফিরে মা এর জন্য তাঁর প্রিয় কোন খাবার রেঁধে তাকে খুশি করতে পারেন।

যারা এখনো খাবার প্রস্তুতে অভ্যস্ত নন তারা এই কাজ টি করতে পারেন। এমন হতে পারে যে আপনার মা এর খুব প্রিয় কোন খাবার আপনার খেতে ভালো লাগেনা বলে মা কখনও সেটা তৈরি করেন না। এই দিন আপনি মা কে বলতে পারেন সেই প্রিয় খাবারটি তৈরি করতে। আর দিন টি যে শুধু আপনার মা এর জন্যই সেটা উপলব্ধি করানোর জন্য মা এর সাথে সেই খাবার টি খেতে পারেন।

সবচেয়ে ভালো হয় যদি সারা দিন আপনি মা এর সাথেই সময় কাটাতে পারেন। যদি আপনার ক্লাস বা অফিসের ঝামেলা না থাকে তাহলে মা এর জন্য এই একটি দিন রেখে দিন।

এখন অনেককেই দেখা যায় মা দিবসে মা এর সাথে ছবি ফেসবুকে প্রোফাইল পিকচার হিসেবে দিতে। আপনিও যদি এমনটা করে থাকেন তাহলে ফ্রেন্ড লিস্টের সবাইকে দেখানোর পাশাপাশি আপনার মা কেও দেখান বা মা এর সাথে একটি সুন্দর ছবি তুলে সেটা দিতে পারেন।

জন্মদিন, বন্ধু দিবস, ভালোবাসা দিবস, পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন কত রকম উৎসব আর দিবস আমরা সারা বছর পালন করি তাহলে মা দিবস পালন করতে ক্ষতি কী? তবে মা দিবস পালন করার অর্থ এই না যে শুধু একটি দিন মা কে সম্মান জানাব আর বাকি দিন মার কোন খোঁজ খবরই নিব না। সন্তান হিসেবে প্রতিদিন মা এর খোঁজ খবর নেয়া, মা কে সময় দেয়া, মার সাথে ভালো ব্যবহার করা আমাদের দায়িত্ব। মা দিবস পালন করার উদ্দেশ্য হল মা কে বোঝানো যে আমাদের মা আমাদের জন্য কত গুরুত্বপূর্ন, অন্য সব কিছুর মত মা দের জন্যও একটি বিশেষ দিন আছে। কারো কারো ক্ষেত্রে একটা সময় আসে যখন মা এর সাথে সন্তানের অনেক চিন্তা ধারাই মিলে না। সেটা হতে পারে পোশাক নিয়ে, খাদ্যাভাস নিয়ে, বন্ধু বান্ধব বা পড়া লেখা নিয়ে। কিন্তু তারপরেও আমাদের মনে রাখতে হবে যে মা কখনো আমাদের জন্য খারাপ কিছু চান না। তাই মা যেমন আমাদের ভালোবাসায় আগলে রাখেন ঠিক সেভাবেই আমাদেরও মা কে বুঝতে হবে, সময় দিতে হবে, সম্মান করতে হবে। পৃথিবীর সব মা দের জন্য রইল মা দিবসের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।

সূত্রঃ সাজগোজ.কম


Related Posts:

0 comments:

Thanks for comment